গোলাম রাব্বানী নাদিম
জামালপুরে বেশিরভাগ মানুষ করোনা (কোভিড-১৯) এর পরীক্ষার জন্য নমুনা দিতে চাইছে না। যদি হয় এমনিতে ভাল হয়ে যাবে এমনটাই মনে করছেন তারা। ফলে চরম হুমকির মুখে পরেছে জনস্বাস্থ্য। এমনটি চলতে থাকলে মহামারী অতি সন্নিকটে।
মঙ্গলবার কথা হয় এক সহকর্মী বন্ধুর সাথে, যিনি নিজেও একজন সাংবাদিক। তিনি জানালেন, করোনার কোন চিকিৎসা নেই, এছাড়া আমার কোন উপসর্গও নেই। ফলে পরীক্ষার করার কোন প্রয়োজন মনে করছি না।
একই অবস্থা সাধারন মানুষসহ সরকারী ও বেসরকারী কর্মকর্তাদেরও। তারা করোনা পরীক্ষা করতে চাইছেন না।
এদিকে উপস্বর্গ ছাড়াই অনেক মানুষের শরীরে করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) এর উপস্থিতি পাওয়া গেছে। জামালপুরের পুর্ব পশ্চিম এর জেলা প্রতিনিধি মেহেদী হাসান, বকশীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিনিয়র নার্স, একজন পাচক এর কোন ধরনের লক্ষণ বা উপস্বর্গ ছাড়াই শরীরের কোভিড-১৯ এর উপস্থিতি পাওয়া যায়।
এদিকে জামালপুরে আরটি-পিসিআর ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে। ল্যাবটি আগামীকাল ১৩ মে থেকে প্রতিদিন ১৮৮টি নমুনা পরীক্ষা করবে।
জামালপুরের ৭টি উপজেলায় লোক সংখ্যা প্রায় ২৬ লক্ষ, পাশ্ববর্তী শেরপুরেও লোক সংখ্যা প্রায় ১৬ লক্ষ, কুড়িগ্রামের দুটি উপজেলা রাজীবপুর ও রৌমারীতে লোক সংখ্যা প্রায় ২ লক্ষ । মোট ৪০ লক্ষ লোকের লক্ষ্য মাত্র নিয়ে ল্যাবটি স্থাপন হলেও সাধারন মানুষের অনাগ্রহের জন্য ল্যাবটি কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটবে ।
এদিকে জামালপুর সিভিল সার্জন ডা: প্রণয় কান্তি দাস জানান, প্রতিদিন গড়ে জামালপুর থেকে ৫০ থেকে ৬০টি করে নমুনা পাঠানো হয় ময়মনসিংহ ল্যাবে। শেরপুর থেকেও গড়ে ৩০ থেকে ৪০টি নমুন পরীক্ষার জন্য ময়মনসিংহ পাঠানো হলেও রাজীবপুর ও রৌমারী জন্য কুড়িগ্রাম হয়ে রাজশাহীতে পাঠানো হত।
জামালপুরের ল্যাব স্থাপনের ফলে নমুনা সংকটে পরবে কি না জানতে চাইলে জামালপুর সিভিল সার্জন ডা: প্রণয় কান্তি দাস বলেন, করোনা নমুন সংগ্রহ বৃদ্ধির জন্য প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রতিটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও কমিউনিটি ক্লিনিক গুলোতে ক্যাম্পিইন করা হবে।
মানুষকে স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি ও করোনা পরীক্ষার জন্য উদ্বুদ্ধ করনের পাশাপাশি করোনা চিকিৎসা সর্ম্পকে প্রচলিত ধারনা দেওয়া হবে।
জামালপুরের এ পর্যন্ত ২০১৭ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এ মধ্যে ১০৮ জনের শরীরে করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) এর লক্ষণ পাওয়া গেছে। জামালপুরে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৩জন মৃত্যু বরণও করেছে।
উপজেলা ওয়ারী শনাক্ত মধ্যে সরিষাবাড়ী ৮, মেলান্দহে ১১, মাদারগঞ্জে ১২, বকশীগঞ্জে ৫, দেওয়ানগঞ্জে ৭, ইসলামপুরে ২৩ ও জামালপুর সদরে ৪২জন । এ পর্যন্ত ৪৮ জন সুস্থ্য হয়ে বাড়ী ফিরে গেছেন।
বর্তমানে করোনায় জামালপুর শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজে আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন ১৪জন রোগী, এখান থেকে ৪২ জনকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বর্তমানে করোনায় হোম আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন ৩৯ থাকলেও সেখানেও ৬জন সুস্থ্য হয়েছেন। অবস্থার অবনতি হলে এ পর্যন্ত ৩জনকে ময়মনসিংহ স্থানান্তর করা হয়েছে।
এ জেলায় মোট হোম কোয়ারান্টাইন ১২০৭, মোট ছাড়পত্র ৯৮১, বর্তমানে হোম কোয়ারান্টিইনে রয়েছে ২২৬ জন।
Ads6